দাঁতের পোকা বের গাছ

আপনি কি দাঁতের পোকা বের করার গাছ ও দাঁতের ব্যথা দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আমার এ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন কেননা এ পোস্টটির মধ্যে দাঁতের পোকা বের করার গাছ ও দাঁতের ব্যথা দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

আশাকরি সম্পূর্ণ পোস্টে পড়লে দাঁতের পোকা বের করার গাছ এবং দাঁতের যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ যে সকল তথ্য ও সমাধান জানতে চান অবশ্যই তার সঠিক উত্তর ও সমাধান পাবেন ঘরোয়া ও ন্যাচারাল উপকরণ এর মাধ্যমে। এছাড়া নিম্ন দেওয়া সকল উপদেশগুলো মেনে চললে অবশ্যই সুস্থ সবল ও মজবুত দাঁত পাবেন।

পোস্ট সূচিপত্র.

দাঁতের পোকা বের গাছ

মানুষের কাছে দাঁত অনেক প্রয়োজনীয়। দাঁত ছাড়া মানুষ কোন কিছু খেতে পাড়বে মানুষের মুখের সৌন্দর্য থাকবে না। আর এ দাঁতের পোকা  হয় তাহলে খাবার খেতে অনেক কষ্ট হয়। মূলত দাঁতের পোকা হয়ে থাকে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ডেন্টাল ক্যারিজ বা দাঁতের ক্ষয় রোগের জন্য।

দাঁতের পোকা বের  করতে ঔষধি গাছ অনেক উপকারি। দাঁতের পোকা বের করার গাছটির নাম হচ্ছে আকন্দ গাছ। ইংরেজিতে এ গাছের নাম “Giant Milkweed”। এই আকন্দ গাছ বা Giant Milkweed গাছের রস যদি ব্যথা যুক্ত স্থানে লাগানো মাত্রই দাঁতের পোকা থাকবে না ও ব্যথা কমে যাবে।

দাঁতের পোকা বের বা ব্যথা দূর করতে আকন্দ গাছ অনেক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।এ গাছ এর পাতার রস এক নিমেষে প্রচন্ড দাঁতের ব্যথা কমিয়ে দিতে পারে।এই গাছটি আমাদের সকলের বাড়িতে বা বাড়ির আশেপাশে পাওয়া যায়।আর বিশেষ করে নদীর পাসে চর এলাকায় এ গাছ বেশি হয়ে থাকে।

দাঁতের ব্যথা দূর করার কিছু গাছ

যা দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে। এখানে এমন কয়েকটি গাছের নাম এবং তাদের উপকারিতা আলোচনা করা হল-

নিম (Neem): নিম গাছের পাতা দাঁতের জন্য খুব উপকারী। এতে অ্যান্টিসেপটিক গুণ রয়েছে, যা দাঁতে ব্যাকটেরিয়া বাড়তে বাধা দেয় এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। এছাড়া, নিমের পাতা গাছের অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ দাঁতের মাড়ির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত নিম পাতা চিবালে দাঁত সুস্থ থাকে।

তুলসি (Basil): তুলসি গাছের পাতা ব্যবহারেও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব। এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে, যা দাঁতে জীবাণু সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। তুলসি পাতা চিবালে দাঁতের পোকা বের হতে সাহায্য করে।

লেবুর খোসা (Lemon Peel): লেবুর খোসা বা লেবুর রসও দাঁত পরিষ্কার করতে সহায়ক। এটি দাঁতের উপর জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে এবং দাঁতের হলুদ ভাব দূর করতে সহায়তা করে। তবে, লেবুর রসের ব্যবহারে দাঁত ক্ষয়ে না যাওয়ার জন্য কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে।

গোয়ালা (Guava): গাওয়া পাতা বা আলিভরাও দাঁতের জন্য খুব উপকারী। এতে রয়েছে ট্যানিন, যা দাঁতের পোকা তৈরি হওয়া থেকে রোধ করে এবং দাঁত মজবুত রাখে। গাওয়া পাতা চিবিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের ব্যথা কমে এবং মাড়ির প্রদাহও সেরে যায়।

হলুদ (Turmeric): হলুদ বা আলত দাঁতের জন্য উপকারী। এটি অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর, যা দাঁতের ইনফেকশন এবং মাড়ির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। হলুদ পেস্ট তৈরি করে দাঁত পরিষ্কার করা যেতে পারে।

দাঁতে পোকা বা ব্যাথা হওয়ার কারণ

আমরা সাধারণত অনেক ধরনের মিষ্টি খাবার, চিনিযুক্ত খাবার, চকলেট, চুইংগাম, ক্যান্ডি ইত্যাদি খাওয়ার খেয়ে থাকি। এ খাবার গুলো থেকে  পরে মুখে অ্যাসিড তৈরি হয়। যেটা ধীরে ধীরে দাঁতের উপরে শক্ত আবরণ 'এনামেল' ক্ষয় করে থাকে। যারা এসব মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার বেশি খায় তাদের ক্ষেত্রে এনামেল ক্ষয় হয়ে দাঁতে ছিদ্র বা গর্ত তৈরি হয়।

দাঁতের মধ্যে ছিদ্র বা গর্ত হলে তাতে ময়লা ও খাদ্য কণা জমা হয়। ফলে দাঁতে পোকা হয় এবং দাঁতে ব্যথা শুরু হয়। দাঁতে পোকা হওয়ার আরো কিছু কারণ রয়েছে।

সাধারণত আমরা যে সব খাবার খাই  সে গুলো আমাদের মুখের দাঁতের ফাঁকে অনেক সময় ধরে আটকে থাকে সেই খাবারগুলো কে আমাদের মুখের ভিতরে থাকা ব্যাকটেরিয়। পচন ধরায়। যার ফলে দাঁতের গোড়ায় ক্ষত সৃষ্টি করে এবং আমাদের দাঁতের ব্যথা তৈরি করে।

আমাদের দাঁতগুলো যখন অনেক ক্ষয় হতে থাকে তখন ব্যাকটেরিয়া এবং এসিড আরো দাঁতের গভীরে ঢুকতে থাকে। যার ফলে আমাদের দাঁতের স্নায়ু ও শির। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেক ব্যাথা শুরু হয়।

দাঁতের যত্ন নেওয়ার উপায়

আমাদের দাঁতের যত্ন রাখা অতি জরুরী কারণ আমাদের দাঁত সৌন্দর্যের একটি অংশ। আপনি যদি কারো সামনে কথা বলেন অথবা হাসি দেন তখন যদি আপনার দাঁতে কালো দাগ অথবা দাঁতের পোকা থাকে। তাহলে এমন অবস্থা সবার সামনে আপনি লজ্জায় পরতে পারেন।নিচে দাঁতের যত্ন নেওয়ার উপায়-

  • সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত পেস্ট দিয়ে বেরাস করতে হবে।
  • চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার পর পেস্ট দিয়ে বেরাস করতে হবে।
  • খাবার খাওয়ার পর ভালো ভাবে পেস্ট দিয়ে বেরাস করতে হবে।

  • চকলেট চুইংগাম এ সকল কার্বোহাইড্রেট বা সক্রিয় জাতীয় খাবার খাওয়ার পর পেস্ট দিয়ে বেরাস করতে হবে।

  • রাতে ঘুমানোর আগে পেস্ট দিয়ে বেরাস করে ঘুমাতে হবে।

দাঁতে পোকা হলে করণীয়

দাঁতে পোকা হলে করণীয় কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। এ সকল ঘরোয়া উপায় জানলে আপনি দাঁতে পোকা হলে করণীয় কি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন।মূলত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার আলু, রুটি, ভাত, চকলেট চুইংগাম এ সকল কার্বোহাইড্রেট বা সক্রিয় জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের দাঁতের ফাঁকে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ বেশি হয় যার ফলে আমাদের মুখের ভিতর ব্যাথা ও পোকা তৈরি হয়।

উপরের বিষয় গুলোর কারণে দাঁতে পোকা বা ব্যাথা হতে পারে সুতরাং এই সকল খাবার থেকে বিরত থাকবেন। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতে পোকা হলে করণীয় কি ঘরোয়। কিছু উপায় সম্পর্কে জেনে নিন-

  • দাঁতে ক্যাভিটি হচ্ছে বা ব্যাথা হচ্ছে বুঝতে পারলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করুন। ক্যাভিটি বা ব্যাথা সাভাবিক থাকলে ঘরোয়া ভাবে মুক্তি পেতে কিছু উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • দাঁতের ক্যাভিটি বা ব্যাথা দূর করতে সবার আগে ঠিক করে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ফ্লোরাইড যুক্ত টুথ পেস্ট দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের ক্যাভিটি বা ব্যাথা দূর করা যাবে।
  • দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে ব্যাথা স্থানে রাখলে ব্যাথা দূর হয়ে যায়।
  • এক কোয়া রসুনের সাথে লবণ মিশিয়ে দাঁতে লাগান। বেশি ব্যাথা হলে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খান।
  • লবঙ্গের সাথে গোলমরিচ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে কয়েক মিনিট দাঁতে দিয়ে রাখুন ব্যাথা কমে যাবে।
  • এক গ্লাস কুমকুম গরম পানির সাথে এক চা-চামুচ লবণ নিয়ে কুলকুচি করুন। দাঁতের পোকা দূর করার পাশাপাশি দাঁত ব্যাথা কমাতে খুব ভালো কাজ করে পানি আর লবণ।
  • এছাড়াও ক্যালশিয়াম, ফসফরাস ও মিনারেল জাতীয় খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাবেন দাঁত ভালো রাখতে সহায়তা করে।
  • দুটি পেয়েরা পাতা চিবিয়ে ব্যাথার দাঁতে চেপে রাখুন আরাম পাবেন।
  • কালো মাজন অথবা কালোজিরা যেটাতে পোকা ধরেছে ওই দাঁতের উপরে লাগিয়ে রাখলে দাঁতের পোকা শুকিয়ে ফেলে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

দাঁতে গর্ত হলে করণীয়

দাঁতের মধ্যে গর্ত বা ক্যাভিটি হওয়ার কারন তাতে ময়লা বিভিন্ন ধরনের খাবার এর জন্য। তারপর থেকে আস্তে আস্তে দাঁত ব্যথা শুরু করে ও শিরশির অনুভূতি হয়।

বিশেষ করে শিশুদের এই গর্ত বা ক্যাভিটি হওয়ার জন্য ব্যথায় অনেক কষ্ট পায়।আর কোন ধরনের খাবার খাওয়ার সময় দাঁত শিরশির করে ওঠে। দাঁতের মধ্যে গর্তের লক্ষণ দেখা মাত্রই দেরি না করে চিকিৎসা । ধীরে ধীরে যদি গর্তের পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়। তখন চিকিৎসা ব্যবস্থা ও জটিল হয়ে পড়ে।

ভাঙা দাঁতকে আজকাল ফিলিং ম্যাটেরিয়াল বা লাইট কিউর দিয়ে সুন্দরভাবে পূরণ করা যায়। যা দেখতে স্বাভাবিক দাঁতের মতো হয়। ডেন্টাল ক্যারেজ প্রাথমিক অবস্থায় খুবই ছোট কালো গর্তের মতো দেখায়। তখন কেউ বুঝতে পারে না তার দাঁতের মধ্যে ডেন্টাল ক্যারিজ হয়েছে। গর্তের মধ্যে জটিলতা তৈরি হওয়ার পরে কেবল ধরা পড়ে।

দাঁতের পোকা বের করার গাছ -শেষ কথা

আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল  দাঁতের পোকা বের করার গাছ  সে সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার অনেক ভালো লেগেছে। এরকম গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url